অংশীদারি ব্যবসায়ের ধারণা

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ব্যবসায় উদ্যোগ - মালিকানার ভিত্তিতে ব্যবসায় | | NCTB BOOK

ব্যবসায় জগতে একমালিকানা ব্যবসায় সবচেয়ে প্রাচীন ও জনপ্রিয় হলেও একক মালিকের মূলধনের স্বল্পতা, অসীম দায়, ব্যবসায়ের ক্ষুদ্র আওতা ইত্যাদি সীমাবদ্ধতার জন্য ব্যবসায়ের পরিধি আরো বৃদ্ধি ও ঝুঁকি কমিয়ে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ব্যবসায় করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ফলে একাধিক ব্যক্তি মিলে নিজেদের পুঁজি ও সামর্থ্য একত্রিত করে যে নতুন ধরনের ব্যবসায় সংগঠন গড়ে উঠে তাকেই অংশীদারি ব্যবসায় বলে অভিহিত করা হয়। মূলত একমালিকানা ব্যবসায়ের অসুবিধাগুলো দূর করার প্রয়োজনেই অংশীদারি ব্যবসায়ের উদ্ভব হয়। তবে অংশীদারি ব্যবসায়ে কিছু কিছু সমস্যাও দেখা দেয়। বিশেষ করে মুনাফা বণ্টন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, দায়িত্ব ও কর্ম বিভাজন, সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ ইত্যাদি বিষয়ে সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও আস্থার সংকট দেখা দিতে পারে। ফলে অংশীদারি চুক্তিপত্র ও অংশীদারি আইন প্রণয়ন করতে হয়। বাংলাদেশের অংশীদারি ব্যবসায় ‘১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন' দ্বারা পরিচালিত হয়। সাধারণত দুই বা ততোধিক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় মিলিত হয়ে অংশীদারি চুক্তির ভিত্তিতে যে ব্যবসায় গঠন করে তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে। একের অধিক বলতে ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন অনুযায়ী সর্বনিম্ন ২ জন এবং সর্বোচ্চ ২০ জন অংশীদারকে বুঝায়। তবে অংশীদারি ব্যবসায়টি যদি ব্যাংকিং ব্যবসায় হয় তখন সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা ১০-এর বেশি হবে না। বাংলাদেশে প্রচলিত ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইনের ৪ নং ধারা মতে 'সকলের দ্বারা অথবা সকলের পক্ষে একজনের দ্বারা পরিচালিত ব্যবসায়ের মুনাফা নিজেদের মধ্যে বণ্টনের উদ্দেশ্যে ব্যক্তিবর্গের মধ্যকার চুক্তিবদ্ধ সম্পর্ককে অংশীদারি ব্যবসায় বলে। যারা এরূপ সম্পর্ক সৃষ্টি করে তাদের প্রত্যেককে ‘অংশীদার' এবং সম্মিলিতভাবে তাদের ব্যবসায়কে অংশীদারি ব্যবসায় বলে।

Content added By
Promotion